Bangladesh to Nepal
নেপালে on arrival ভিসা। সুতরাং কোন রকম ভিসার ঝামেলা ছাড়াই নেপাল পোর্টে গেলেই ভিসা পেয়ে যাবেন।কিছু জিনিস অবশ্যই সঙ্গে রাখবেন।
১। পাসপোর্ট।
২। ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ফটো। (১ টা Nepal পোর্টে জমা নিবে অন্যটি নেপালের সিম কেনার সময় লাগবে।)
৩। টাকা ডলার করে নিবেন। কোন Endorsement চেক করে না। তবে করে নিতে পারেন।
৪। একটা কলম।
ব্যাস, হয়ে গেল আপনার ট্যুরের সব প্রয়োজনীয় জিনিস।
নেপালে বাংলাদেশিদের জন্য বছরে একবার ভিসা ফি ফ্রি। সুতরাং আপনি যদি ঐ বছরে প্রথম যান সেক্ষেত্রে ফ্রি। আর যদি একই বছরে দ্বিতীয় বার বা বেশী যান সেক্ষেত্রে আপনাকে ভিসা ফি দিতে হবে।
১৫ দিনের জন্য ভিসা ফি - ২৫ USD
৩০ দিনের জন্য ভিসা ফি – ৪০ USD
নেপালে দুই ভাবে যাওয়া যায়। বাই এয়ার অথবা বাই রোড।
Bangladesh to Nepal by Air
বাংলাদেশ থেকে নেপালের ত্রিভূবণ এয়ারপোর্ট, কাঠমণ্ডু যাওয়ার জন্য বাংলাদেশ বিমান সবচেয়ে ভাল এরপর Regent এয়ারওয়েজ এ যেতে পারেন। আমি বাংলাদেশ বিমান এর টিকেট কেটেছি। প্লেন এর টিকেট, করোনার জন্য একটু বেশী। প্রায় ২৫০০০-৩০০০০ টাকা।
প্রথমবার বাসা থেকে আমি ক্যাবে গিয়েছিলাম সরাসরি এয়ারপোর্ট। ২য়বার আমি বাসা থেকে বাসে এয়ারপোর্ট গিয়েছিলাম, যেহেতু আমার তেমন লাগেজ ছিল না। ঢাকা এয়ারপোর্টে টার্মিনাল গেটের সিকিউরিটিকে পাসপোর্ট আর টিকেট দেখিয়ে ভিতরে ঢুকলাম। ঢুকেই প্রথমেই সব লাগেজ বেল্টে দিয়ে বের করতে হয়। এরপর 'বাংলাদেশ বিমান' এর counter এ বোর্ডিং পাস নিলাম। এখানে আপনার প্লেন এর সীট নির্দিষ্ট করে দিবে। আগেই বলবেন ডান পাশের জানালার পাশে সীট দিতে। কারন সেখান থেকে এভারেস্ট দেখতে খুব সুন্দর লাগে। লাগেজের ওয়েট নিয়ে, বেল্ট দিয়ে পাঠিয়ে দিল। ম্যাক্সিমাম জন-প্রতি ২০ কেজি নিতে পারবেন। এর উপরে গেলে প্রতি কেজি এক্সট্রা চার্জ দিতে হবে। এখানে আপনার করোনার সার্টিফিকেট দেখতে চাইতে পারে। অবশ্যই নিয়ে যাবেন।
বোর্ডিং পাস পেয়ে আমার হ্যান্ডব্যাগ নিয়ে ভিতরে যাওয়ার আগে একটা এক্সিট ফর্ম নিলাম গেইটের বাইরে। এক্সিট ফর্ম পুরন করেই ফর্মটি নিয়ে ভেতরে counter এর লাইনে দাঁড়ালাম, পাসপোর্টে বাংলাদেশের এক্সিট সিল লাগানোর জন্য। পাসপোর্টে বাংলাদেশের এক্সিট সিল পাওয়ার পর ভেতরে যেয়ে বিমান বাংলাদেশের counter এ গেলাম। যদিও টাইম এবং প্লাটফর্ম নাম্বার পিছনে ডিজিটাল বোর্ডে ছিল তারপরও তাদের বললাম কখন ছাড়বে, কোন প্লাটফর্ম। ১০ টি প্লাটফর্মের ১ নাম্বার হল একেবারে বামে আর প্লাটফর্ম ১০ হল একেবারে ডানে। হাতে সময় ছিল তাই ডিউটি ফ্রি শপগুলোতে ঘুরলাম। সিগারেট এবং এলকোহল অনেক কম দাম, যা বাংলাদেশের ভিতরে অনেক দাম। ইচ্ছা করলে ডিউটি ফ্রি সিগারেট কিনে নিয়ে যেতে পারবেন। প্লেনে লিকুইড এলাউ না আর বাইরে এলকোহল নেয়ার প্রয়োজন নেই। সময়মত আবার counter এ গেলাম। বাংলাদেশ তো তাই আপনার চোখ কানও একটু খোলা রাখতে হবে। কখন কোন প্লাটফর্ম ঠিক হয়।
সময় মত counter থেকে কনফার্ম করা প্লাটফর্মে গেলাম, এখানে একটি চেক হল। আপনার জুতা বেল্ট খুলে, পকেটের সব জিনিষ বাস্কেটে রেখে চেকের পরে আবার পরে নিতে পারবেন। এখানে কোন লিকুইড নিয়ে যাওয়া যায় না। এরপর ভিতরে বসলাম। প্লেন রেডি হলে চলে যাবেন প্লেন এ। নেপাল যেতে প্রায় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় লাগে।
প্লেন এ আপনাকে একটা ফর্ম দিবে। আপনাকে পুরন করে সাথে রাখতে হবে। যা নেপাল এয়ারপোর্ট এ জমা দিবেন। যাওয়ার সময় এভারেস্ট দেখতে ভুলবেন না। প্লেন যাবে ৩২০০০ ফিট উপর দিয়ে আর এভারেস্ট এর উচ্চতা ২৮০০০ ফিট। তাই এভারেস্টকে উপর থেকে দেখার এই একটা ফ্রি সুযোগ।
নেপাল এয়ারপোর্ট এ পৌঁছে দেখবেন কয়েকটা লাইন। বাংলাদেশিদের জন্য দেখবেন দুটো লাইন। এবার বলছি কেন। নেপাল-এ বছরে একবার বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ফি ফ্রি। সুতরাং আপনি যদি ঐ বছরে প্রথম যান সেক্ষেত্রে ১ম লাইন এ দাঁড়াবেন। আর যদি একই বছরে দ্বিতীয় বার বা বেশী যান সেক্ষেত্রে আপনাকে ভিসা ফি দিতে হবে। ভিসা ফি দেয়ার একটা ডেস্ক আছে। সরাসরি ডেস্কে গিয়ে ডলার দিন।
১৫ দিনের জন্য ভিসা ফি - ২৫ USD
৩০ দিনের জন্য ভিসা ফি – ৪০ USD
ডলার জমা দিয়ে রসিদ নিয়ে ২য় লাইন এ দাঁড়াবেন।
এবার নেপালের এন্ট্রি সিল নিয়ে Escalator দিয়ে নেমে আসলাম নিচে। হ্যান্ডব্যাগ চেক করে ভিতরে গিয়ে লাগেজের জন্য অপেক্ষা করে, লাগেজ নিয়ে বেরিয়ে আসলাম।
বের হওয়ার আগেই দেখলাম একটি দোকান, যেখানে ডলার ভাঙ্গানো এবং সিম কেনা যায়। আমি এখান থেকে কিনি নাই। এরপর এয়ারপোর্ট থেকে বের হলেই দেখা যায় অনেক ক্যাব। যেতে হবে থমেল (Thamel) এ, যা কিনা Kathmandu এর একটি ট্যুরিস্ট এরিয়া। ভাড়া যদিও ২৫০ থেকে ৩০০ নেপালি রুপী। কিন্তু তারা চাইবে ৫০০। তাই এবার দামাদামি করে যেতে হবে। আমি প্রথমবার ক্যাবে গিয়েছিলাম ৩০০ রুপী দিয়ে। যেয়ে থেমেছি থমেলের নরশিং চক। চক মানে মোড়। তবে মোড়টি খুবই ছোট। এখান থেকে হেটে আমি হোটেল গিয়েছি। আপনার হোটেল ঠিক করা থাকলে সরাসরি ক্যাবে যেতে পারেন। ২য় বার নেপাল ভ্রমনে আমি এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে (বেশ কিছুদুর হেটে এয়ারপোর্ট বাউনডারি গেইট থেকে বের হয়ে বাম পাশেই বাস স্ট্যান্ড) বাসে গিয়েছিলাম। ভাড়া নিয়েছিল ২০ রুপী। বাস নিয়ে গিয়েছিল রত্না পার্ক। সেখান থেকে থমেল কিছু টা হেটে যেতে হয়েছে। যেহেতু আমার তেমন লাগেজ ছিল না তাই কোন প্রবলেম হয়নি।
Bangladesh to Nepal by Road
বাই রোডে বাংলাদেশ থেকে নেপাল যেতে পারবেন। এরজন্য দরকার ইন্ডিয়ার ডাবল ট্রানজিট ভিসা। ইন্ডিয়ার ডাবল ট্রানজিট ভিসা পেতে আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশ টু শিলিগুড়ি বাস (শ্যামলী পরিবহন) অথবা ট্রেনের রিটার্ন টিকেট কাটতে হবে।
সুতরাং আপনাকে বাসে অথবা ট্রেনে যেতে হবে শিলিগুড়ি। তারপর সেখান থেকে যেতে হবে বাসে রানীগঞ্জ। বাস স্ট্যান্ড থেকে নেমে অটোতে বর্ডার "পানিরটাঙ্কি"। তারপর ইন্ডিয়ার ইমিগ্রেশন পার হয়ে পশ্চিমে একটা ব্রিজ। ব্রিজটি মেছি নদীর উপরে তাই এর নাম মেছি ব্রিজ। ব্রিজ হেটে পার হয়ে নেপাল সাইড "কাঁকড়ভিটা"। নেপালের ইমিগ্রেশন পার হয়ে ইচ্ছা করলে কাঁকড়ভিটায় থাকতে পারেন এখানে অনেক হোটেল আছে। অথবা বাসে চলে যান Kathmandu। বাস বিকেল ৫ টায় ছেড়ে যায়। ভাড়া ১২০০ রুপী। পরদিন ১১ টায় Kathmandu পৌছবেন। বাস গঙ্গাবু বাস স্ট্যান্ডে থামবে। বাস স্ট্যান্ডের ঠিক পাশে (পূর্ব দিকে) একটা রাস্তা দক্ষিন দিকে চলে গেছে। রোডটির নাম "সামাখুশি মর্গ" (মর্গ মানে রোড)। সেখান থেকে পাবলিক মাইক্রো করে চলে যান থমেল মোড়। ভাড়া ২০ রুপী। থমেল মোড়ে নামিয়ে দিয়েই মাইক্রোটি বামে চলে যাবে। আপনি রাস্তা পাড় হয়ে ঢুকে যান থমেল মর্গ। রোড দিয়ে সোজা গেলেই নরশিং চক।
থমেল এর কোথায় থাকবেন এবং Kathmandu কোথায় বেড়াবেন জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন।
Tourist Places in Kathmandu
আশা করি পোস্টটি আপনাদের কাজে লাগবে। পোস্টটি শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের সাথে। পোস্ট সম্পর্কে আপনার মতামত লিখুন নিচের কমেন্ট বক্সে।
আরও কিছু দরকারী পোস্ট:
* নতুন পাসপোর্টের জন্য বা পাসপোর্ট নবায়ন করার জন্য কী করতে হবে
* বাংলাদেশের জন্য ভিসা মুক্ত দেশগুলির তালিকা
* পাসপোর্টে কীভাবে ডলার অনুমোদন করবেন
* ভিসার জন্য এনওসি ফর্ম্যাট
* ভারতীয় ভিসা পেতে কী করবেন
* নেপালি ভিসা পেতে কী করবেন
* বাংলাদেশ থেকে কলকাতা যাওয়ার বিভিন্ন রুট
Click below to go Homepage
No comments:
Post a Comment